বাংলাদেশে নেটওয়ার্ক মার্কেটিং নিয়ে কিছু কথা:

বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ইন্ডাস্ট্রিতে পরিবেশক হওয়ার চেয়ে এমডি, চেয়ারম্যান অর্থাৎ নেটওয়ার্ক কোম্পানির মালিক হওয়া সহজ হয়ে দাড়িয়েছে। কেউ কোনো কোম্পানিতে ব্যর্থ হলেই মালিক হয়ে যাচ্ছে রাতারাতি। এই কোম্পানিগুলো প্রথম ১-২ বছরের মধ্যে ৯০% বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পরবর্তীতে ৩-৫ বছরের মধ্যে ৯৯% বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নতুন প্রজন্মের যারা নেটওয়ার্ক ইন্ডাস্ট্রিতে উদ্দোক্তা হয়ে কাজ শুরু করছেন এই ধরনের কোম্পানি থেকে সাবধান থাকবেন তবে নতুন কোম্পানিতে কাজ করা দোষের কিছু নয়, ঝুঁকি একটু বেশী, লোভ দেখিয়ে আপনার লাইফ থেকে ৪-৫ বছর সময় নষ্ট করে দিবে। যেখানে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিতে এই সময়ে একটু একটু করে এগিয়ে গেলেও আপনার স্বপ্নের কাছাকাছি চলে যাবেন। নতুন কোম্পানি যদি সঠিক নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসার পদ্ধতিতে চলে তবে সেখান থেকে আপনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব। নতুন হোক বা পুরাতন যদি কোনো কোম্পানিতে নিচের ৫ টা বিষয়ের মধ্যে ঘাটতি থাকে তাহলে এই ধরনের কোম্পানিতে কাজ করা ঝুকিপূর্ণ।

১. P - Promoter (পরিচালক ): যদি পরিচালকবৃন্দ পূর্ব দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা না থাকে তার মানি আগে থেকেই নেটওয়ার্কিং অভিজ্ঞতা সম্পুর্ণ পরিচালক প্রয়োজন। আপনার সব কথায় যদি পরিচালকবৃন্দ ঘুরতে থাকে তাহলে এমন কোম্পানিতে কাজ করা উচিৎ নয় । পরিচালকদের অবশ্যই সৎ হতে হবে। কথার সাথে কাজের পুরোপুরি মিল থাকতে হবে। পরিচালকদের অবশ্যই অর্থনৈতিকভাবে শক্ত হতে হবে।

২. P - Profile (কোম্পানির ভিত্তি কি শক্তিশালী): ইতিমধ্যে কি তারা সফলতার নজির স্থাপন করতে পেরেছে, লোকদের জীবন পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পেরেছে এবং প্রতি বছর কি কোম্পানির সবদিক থেকে উপরের দিকে যাচ্ছে ? যদি রেকর্ড খারাপ হয় এমন কোম্পানিতে কাজ করাও উচিৎ নয়।

৩. P - Products (১০০% পণ্য ভিত্তিক কোম্পানি কি না) এবং সেই পণ্যের কোয়ালিটি পরিক্ষিত আছে কিনা এবং পণ্য এভেলেবল আছে কি-না ? মনে রাখবেন দুনিয়ায় সব পণ্য আপনার কোম্পানিতে থাকতে হবে বিষয়টি তা নয়। এমন পণ্য থাকতে হবে যা লোকাল আইন সাপোর্ট করে, যেই পণ্য লোকাল আইনে বিক্রি করা নিষিদ্ধ সেই প্রোডাক্ট আপনি যদি চান এবং আপনার কোম্পানিও সেই সুযোগ করে দেয় ও পণ্যের চেয়ে শুধু জয়েনিংয়ের উপর জোড় দেয় এবং হুন্ডিতে, ল্যাগেজে প্রোডাক্ট এনে বিক্রি করে এমন কোম্পানিতে কাজ করা অধিক ঝুকিপূর্ণ ও সময়ের অপচয় করা।

৪. P- Plan (কোম্পানির মার্কেটিং প্ল্যান): কোম্পানির মার্কেটিং প্ল্যান পরীক্ষিত কি না, এই প্ল্যানে কাজ করে ইতিমধ্যে মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পেরেছে কি না? তার মানি রাতারাতি কিছু করাকে বুঝাচ্ছি না, যদি এই প্ল্যানে কাজ করে তেমন সফলতার দৃষ্টান্ত না থাকে তাহলে এমন কোম্পানিতে কাজ করা ঠিক নয় ।

৫. P- Payout (কমিশন বন্টন পদ্ধতি): কমিশন বন্টন পদ্ধতি সহজ কি না এবং নিয়মিত কমিশন পরিশোধ করে কিনা? যদি নিয়মিত কমিশন পরিশোধ না করতে পারে এবং রিওয়ার্ডগুলো ঝুলিয়ে রাখে, দেব-দিচ্ছি বলে এমন কোম্পানিতে কাজ করা উচিৎ নয়। যেকোনো ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদি সফলতা পেতে গেলে হোক ট্রেডিশনাল অথবা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসা ৫ -১০ বছর দৃঢ়তার সাথে লেগে থাকার মানসিকতা থাকতে হবে। আপনি যদি ১-২ বছরে কোনো কোম্পানি থেকে বাড়ি-গাড়ি আশা করেন সেটা আপনার উচ্চবিলাসী লোভের প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়। শর্টকাটভাবে লিফট দিয়ে যতটা উপরে উঠবেন রকেটের গতিতে ততটা নিচে নামবেন। গাজী কামরুল ইসলাম নেটওয়ার্ক ও উদ্যোক্তা।

• নাম : নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় সাফল্যের কলাকৌশল
• লেখক: গাজী কামরুল ইসলাম
• প্রকাশনী: : বাক্য প্রকাশনী
• পৃষ্ঠা সংখ্যা : 128
• ভাষা : bangla
• ISBN : ৯৭৮৯৮৪৩৫০৪৯৩৭
• বান্ডিং : hard cover
• প্রথম প্রকাশ: 2021